1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

শিক্ষাজীবন ঝরে পড়তে পারে

  • Update Time : রবিবার, ৪ অক্টোবর, ২০২০
  • ২২৫ Time View

প্রত্যয় নিউজডেস্ক: শিক্ষাগত দিক বিবেচনায় বর্তমান বিশ্ব একটি বিশেষ পরিস্থিতি অতিক্রম করছে। বিশ্বের প্রায় এক বিলিয়ন শিক্ষার্থী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারছে না। শিক্ষা কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরে স্থবির হয়ে আছে। অদূর ভবিষ্যতে এ স্থবিরতা কেটে যাবে, এমন সম্ভাবনাও ক্ষীণ। এমন পরিস্থিতিকে ‘গ্লোবাল এডুকেশনাল ইমার্জেন্সি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন শিক্ষাবিদ ও সংশ্লিষ্টরা। স্মরণকালে এমন জরুরি অবস্থা দেখেনি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরের প্রাণিকূল। ইতিহাসের পাতা উল্টালে স্মরণাতীত কালের কতিপয় মহামারী সম্পর্কে অবহিত হওয়া যায়। ধারণা করা হয়, তখনো হয়তো এমন গ্লোবাল এডুকেশনাল ইমার্জেন্সি ছিল।

করোনা মহামারী বৈশ্বিক চৌহদ্দিকে অতিক্রম করছে চক্রাকারে। এশীয় দেশ চীন থেকে শুরু করে জাত চিনিয়েছে গ্রহের সব দেশকেই। ধারাবাহিকভাবে আক্রান্ত হয়েছে ইউরোপ, আমেরিকা, এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলো। সংক্রমণের হার সর্বত্র সমান্তরাল রেখায় চলেনি। ইউরোপ, আমেরিকায় যখন ঊর্ধ্বমুখী, এশিয়া, আফ্রিকায় তখনো সংক্রমণের হার বাড়েনি। আবার এশিয়া, আফ্রিকায় যখন প্রকোপ বেড়েছে, ইউরোপীয় দেশগুলো তখন কিছুটা স্থিতিশীল। ধকল কেটে সামাল দিয়ে উঠছে তারা। স্বাস্থ্যবিধির সাথেও পুরোপুরি অভ্যস্ত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় অনেক দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হচ্ছে। তবে তাদের নিরাপত্তার জন্য বাড়তি সুযোগ-সুবিধাও দেওয়া হচ্ছে।

স্কটল্যান্ডের কথাই ধরা যাক। স্কটল্যান্ডের পরিস্থিতি মোটামুটিভাবে স্থিতিশীল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে বাড়তি নজরদারিতে রাখা হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। সবাই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন। জোর দেওয়া হয়েছে ‘অন-ডিমান্ড টেস্টিংয়ে’। উপসর্গ না থাকলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যেকোনো ব্যক্তি যেকোনো সময়ে বিনামূল্যে পরীক্ষা করাতে পারবেন। চিকিৎসা ক্ষেত্রেও তাদের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করা হচ্ছে। জীবনের সুরক্ষার ব্যাপারে খেয়াল রেখে তারা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের দিকে নজর দিচ্ছেন।

তবে বাংলাদেশের চিত্রপট ভিন্ন। বাংলাদেশের সংক্রমণ বর্তমানে ঊর্ধ্বমুখী। এ সময়কেই সংক্রমণের ‘পিক টাইম’ ধরা হয়। তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্র দেশ হওয়ায় জীবিকা নির্বাহে অধিকাংশ জনগোষ্ঠীকেই কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে। গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে অধিক জনসংখ্যা। অনেকে স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না আবার অনেকের জন্য মানা সম্ভব হচ্ছে না। জনস্বাস্থ্য উচ্চ ঝুঁকিগ্রস্ত হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে অন্য দেশের উপমা টেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া নিতান্তই বালখিল্যতা। বাংলাদেশের থেকে সেসব দেশের চিত্র ভিন্ন। সেসব দেশে উপচেপড়া জনগোষ্ঠী নেই, দেশের মানুষের স্বাস্থ্যবিধি না মানার দুঃসাহস নেই, স্বাস্থ্যসেবার হালহাকিকতও ভিন্ন।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রিওপেন করা প্রথম দেশ ইসরাইলের থেকে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। ইসরাইল সর্বপ্রথম দেশ হিসেবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে পড়েছেন নিদারুণ বিপাকে। সংক্রমণের হার কম থাকায় খুলে দেওয়া হয় সে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পুনরায় বন্ধ করতে বাধ্য হয় ইসরাইল। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যায় চক্রবৃদ্ধি হারে। তারা এটিকে তাদের জন্য বড় ব্যর্থতা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।

ইসরাইলের মহামারী বিষয়ক জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের সভাপতি ও ইয়েজমান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সের প্রফেসর এলি ওয়াক্সম্যান বৈশ্বিক অন্য দেশকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খোলার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘এটি একটি বড় ব্যর্থতা ছিল। নিশ্চয়ই আমরা যা করেছি; অন্যরা তা করবেন না।’

মুদ্রার উল্টো পিঠও রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে দীর্ঘসময় বিলম্ব ঘটলে এর ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। দরিদ্র এ দেশের অনেক শিশু-কিশোরেরই দু’বেলা আহার করে উদরপূর্তি করার স্বাধ মেটে না। ‘ফ্রি স্কুল মিল’ থেকে বঞ্চিত হয়ে কষ্টে পড়তে হয় তাদের। অনাহারী-অর্ধাহারী থাকতে হয় তাদের। নিঃসঙ্গতায় মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব পড়ছে অনেকের। এ ছাড়া দীর্ঘ বিরতির কারণে শিক্ষা কার্যক্রমে অনভ্যস্ত হয়ে উঠছেন অনেক শিক্ষার্থী। জীবিকা নির্বাহে অনেকে কাজে নেমেছেন। পরিবারের হাল ধরেছেন। অনেকে আবার নানা অপকর্মে জড়িয়ে বিপথগামী হচ্ছেন।

দীর্ঘসময় পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে অনেক শিক্ষার্থী ঝরে যেতে পারে। পুনরায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসতে অনীহা প্রকাশ করতে পারে। যে কাজে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে সেটি চালিয়ে যেতে উদ্যত হতে পারে। পৃথিবীর অনেক যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে এমন নজির রয়েছে। দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে অনেক শিক্ষার্থীই পুনরায় শ্রেণিকক্ষে বসেনি। নতুন পেশা বেছে নিয়েছে।

ইউনেস্কোর ধারণা মতে, মহামারীর পর অন্তত ত্রিশ মিলিয়ন শিক্ষার্থী পুনরায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে না ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে। সুতরাং খেয়াল রাখতে হবে, যাতে অকালে শিক্ষাজীবন ঝরে না পড়ে।

এক্ষেত্রে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। সন্তান ও শিক্ষার্থীদের সাথে সম্পৃক্ততা থাকতে হবে। নিয়মিত তদারকি করতে হবে। বাড়িতে বসে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করতে হবে। মানসিক স্বাস্থ্য চাঙা রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে হবে। জীবনকে অগ্রাধিকার দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে হবে। শিক্ষা ও জীবন দুটোই বাঁচাতে হবে।

লেখক: শিক্ষার্থী, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..